নাগরাকাটা: মিশন লাইফ কর্মসূচি শুরু করল বন দপ্তরের জলপাইগুড়ি ডিভিশন। সোমবার থেকে শুরু হওয়া ওই কর্মসূচিটির মূল লক্ষ্য জনমানসে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দেওয়া। ছোট ছোট নানা ব্যবহারিক পরিবর্তনের মাধ্যমেও যে নির্মল পরিবেশ গড়তে কয়েক কদম এগিয়ে যাওয়া সম্ভব সেটাই সর্বত্র তুলে ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচিটি চলবে আগামী ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পর্যন্ত। জলপাইগুড়ি ডিভিশনের অন্তর্গত ১০টি রেঞ্জ মিলিয়ে মোট ৪০০টি কর্মসূচি পালিত হবে।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ২০২১ সালের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিশন লাইফ কর্মসূচিটি শুরু করার কথা ঘোষণা করেন। জল, পরিবহন, খাদ্য, বিদ্যুৎ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পণ্যের পুনর্ব্যবহারের মতো নানা বিষয়ে পরিবেশ বান্ধব আচরণের ওপর জোর দেওয়াই মিশন লাইফের মূল লক্ষ্য। কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের নির্দেশে রাজ্য বন দপ্তরও প্রায় ১ মাস ব্যাপী এই উদ্যোগে জোরকদমে সামিল হয়েছে।
ঠিক কি বিষয়ের ওপর সচেতনতা তৈরিতে কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে তার একটি তালিকাও বন দপ্তরের তরফে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়, জল সাশ্রয়, প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধ, খাদ্যাভাসে কিছু পরিবর্তন ও সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি মেনে চলা, বর্জ্যের পরিমাণ ক্রমশ কমিয়ে আনা, স্বাস্থ্যকর জীবনশৈলীর মতো নানা বিষয়। এদিন বন দপ্তরের জলপাইগুড়ি ডিভিশনের ডায়না রেঞ্জের কর্মীরা সশস্ত্র সীমা বলের জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে মিশন লাইফ শুরু করে। সঙ্গে ছিলেন আশপাশের বন বস্তির যৌথ বন পরিচালন সমিতির সদস্যরা। রেঞ্জ অফিস চত্ত্বর ও আশপাশের এলাকায় গিয়ে প্লাস্টিক সাফাই অভিযানের পাশাপাশি প্লাস্টিকের ব্যবহার না করার জন্য স্থানীয়দের বার্তা দেন বন কর্মীরা।
রেঞ্জার অশেষ পাল বলেন, পরিবেশ ভাবনার বিষয়টি বহু মাত্রিক। বহু ছোটখাটো বিষয়ের ওপরও যদি আমরা মনোযোগ দিই তবে সকলে একসঙ্গে নির্মল পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব। যেমন ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বা খালি ঘরে যাতে আলো না জ্বলে কিংবা পাখা না ঘোরে সেজন্য দরকার শুধু সুইচ বন্ধ করে দেওয়া। এতে শক্তির সাশ্রয় হবে। অথবা ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি-বাইক যদি ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয় তবে বাঁচবে জ্বালানি। সমস্ত কিছুই মানুষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।
এদিন লাটাগুড়ি রেঞ্জের তরফেও মিশন লাইফ কর্মসূচিটি শুরু করা হয়। ময়নাগুড়ি রোড পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৭০ কেজি ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক জড়ো করে তা পুড়িয়ে ফেলা হয়। পাশাপাশি লাটাগুড়ি বাজারে প্রচার করা হয় কেউ যাতে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার না করেন। রিসর্ট ও হোটেল মালিকদের জল অপচয় বন্ধ, গাড়ি চালকদের পেট্রোল-ডিজেল সাশ্রয়ের পরামর্শ ও পদ্ধতি জানিয়ে দেওয়া হয়।