রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি থানার ঢিল ছোড়া দূরত্বে মহাবীরস্থানে জুয়ার ঠেক বসছে। সেখানে অবাধে মদ্যপানও চলছে। এই জুয়া আর মদে রিকশা, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে মুটে মজদুররাও আসক্ত হচ্ছেন। দিনভর খাটনি করে রোজগারের পুরোটাই জুয়া খেলে আর মদ খেয়ে তাঁরা বাড়ি ফিরছেন। ফলে ঘরে রোজই অশান্তি হচ্ছে। অভিযোগ, সবকিছু জেনেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ। তা না হলে থানার এত কাছে এভাবে জুয়া, মদের ঠেক কীভাবে চলছে বলে প্রশ্ন উঠেছে। একটি জুয়ার ঠেকের মালিক গৌরাঙ্গ সরকার অকপটে স্বীকার কললেন, ‘এখানে ওয়ান ডিজিট খেলা চলে। রিকশা, ভ্যানচালক আর মজদুররাই আমাদের ক্রেতা।’ শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সুভেন্দ্র কুমার ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
শিলিগুড়ি থানার খুব কাছেই মহাবীরস্থান বাজার। মহাবীরস্থান ফ্লাইওভারের নীচে সবজি, মাছ থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরো পণ্যের বাজার রয়েছে। শহরের ব্যস্ততম এলাকার অন্যতম মহাবীরস্থান। শিলিগুড়ি শহর তো বটেই, শহরতলি ও বিভিন্ন জেলার প্রচুর মানুষ প্রতিদিন এখানে আসেন। এই সুযোগেই এখানে জুয়া এবং মদের রমরমা কারবার চলছে। মহাবীরস্থান থেকে ফ্লাইওভারের গা ঘেঁষে সবজি বাজারের দিকে যাওয়া রাস্তায় কিছুটা এগোলেই দু’দিকে একাধিক ঝুপড়ি রয়েছে। এই ঝুপড়িগুলিতেই ওয়ান ডিজিট লটারির ব্যবসা চলছে।
ক্রেতা সেজে রবিবার ওই ডেরায় গিয়ে দেখা গেল, সেখানে একাধিক বোর্ড টাঙিয়ে রাখা হয়েছে। সেই বোর্ডেই প্রতি বারের খেলার ফলাফল লিখে দেওয়া হচ্ছে। জানা গেল, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় এখানে খেলা হয়। প্রতিটি ডিজিট বা সংখ্যার দাম ১০ টাকা। ১-৯ পর্যন্ত সংখ্যা রয়েছে। ১০ টাকায় একটা সংখ্যা নিতে হয়। পুরস্কার হিসেবে ৯০ টাকা পাওয়া যায়। অর্থাৎ কেউ যদি ১০০ টাকায় ১০টি সংখ্যা কেনেন তাহলে তিনি ৯০০ টাকা পুরস্কার পেয়ে যাবেন। আর এই নেশাতেই অটো, রিকশা, ভ্যানচালকরা বুঁদ হয়ে রয়েছেন। বেশ কিছু ভ্যানচালককে এখানে দেখা গেল যাঁরা ভ্যানে পণ্য পরিবহণের ফাঁকেই এখানে দাঁড়িয়ে জুয়ার লটারি কাটছেন, কেউ আবার লটারি মিলিয়ে নিচ্ছেন। শুধু জুয়াই নয়, এখানে মদেরও অবাধ কারবার চলছে। গৌরাঙ্গ অবশ্য বললেন, ‘এখন ব্যবসা অনেকটাই কমেছে। প্রতিদিন দেড়–দুই হাজার টাকা বেশি আয় হয় না।’