সুভাষ বর্মন, পলাশবাড়ি: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (H.S Exam 2024) চলছে। তবুও এই অবস্থাতেই বেহাল সেতু সংস্কারের দাবিতে পরীক্ষার্থীরা রাস্তায় নামল। আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের হলেও পুঁটিমারি মোড় থেকে কোচবিহারগামী জেলা পরিষদের রাস্তায় গিরিয়া সেতুর উপর দিয়ে দুই জেলার বহু মানুষ যাতায়াত করেন। ৩০ বছর ধরে এই সেতুটি বেহাল হয়ে রয়েছে। শুক্রবার পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে আকাশ দাস, রাবিয়া খাতুনদের মতো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা (Examinee) নিজে থেকেই প্রায় এক ঘণ্টা বেহাল সেতুর মুখে দাঁড়িয়ে পথচলতি মানুষের সই সংগ্রহ করে। সেতুর সমস্যা মেটাতে পরীক্ষার্থীদের এভাবে রাস্তায় নামতে দেখে অনেকেই অবাক।
পূর্ব কাঁঠালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুপর্ণা বর্মনের বক্তব্য, ‘গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।’ আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে বললেন, ‘এই সেতুটি তৈরির জন্য সবরকমের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথাও হয়েছে।’
ফালাকাটা-আলিপুরদুয়ার সড়কের পুঁটিমারি মোড় থেকে দক্ষিণে জেলা পরিষদের রাস্তায় গিরিয়া সেতুর অবস্থান। এই রাস্তা দিয়ে কোচবিহার জেলায় যাওয়া যায়। দুই জেলার লিংক রোড হলেও সেতুর কাজ তিন দশক ধরে ঝুলে রয়েছে৷ সেতুর (Bridge) মাঝখানে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। রেলিং ভাঙা। সেতুর মাঝের অংশটি নীচু হয়ে পড়েছে। ১৯৯৩ সালের বন্যায় এই সেতুর ক্ষতি হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। স্থানীয়দের তরফে আগেও সেতুটি নিয়ে বহু আন্দোলন, অবরোধ হলেও সমস্যা মেটেনি।
শিলবাড়িহাট হাইস্কুলের পড়ুয়া আকাশ দাস বলল, ‘সেতুর উপর দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাওয়া যায় না। যখন তখন দুর্ঘটনা (Accident) ঘটতে পারে। ছোটবেলা থেকেই এমনটা দেখে আসছি। তাই এদিন সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে মানুষের সই নেওয়া হয়।’ পরীক্ষার্থী রাবিয়া খাতুন বলল, ‘হয় এই সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা হোক অথবা নতুন সেতু তৈরি করা হোক৷ এই দাবিতেই আরও দু’দিন পথচলতি মানুষের সই সংগ্রহ করা হবে। তারপর প্রশাসনকে লিখিত দাবি জানানো হবে।’ ববিতা বর্মন, অর্পিতা বিশ্বাস, দীপ সরকারদের মতো পরীক্ষার্থীদেরও একই বক্তব্য।
স্থানীয় বাসিন্দা অরূপ বিশ্বাস বললেন, “ছয়-সাত মাস আগে সেতুর বিষয়টি ‘এক ডাকে অভিষেক’–এ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।” পড়ুয়াদের ডাকে সই করে অটোচালক প্রদীপ নট্ট বললেন, ‘বেহাল সেতুটিতে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সেতু সংস্কারের দাবিতে সই করলাম।”