ফাঁসিদেওয়া: রাজনীতির ময়দানে নেমে সেফ খেলছেন প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা (Harsh Vardhan Shringla)। বেশ কয়েক মাস থেকেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং কেন্দ্রের প্রার্থী হতে পারেন তিনি এমন জল্পনা শুরু হয়েছে। শনিবার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ২ জায়গায় বিশেষভাবে সক্ষমদের হুইল চেয়ার বিতরণ করলেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। লিউসিপাকড়িতে কর্মসূচিতে এসে সেই জল্পনা জিইয়ে রাখলেন প্রাক্তন বিদেশ সচিব।
২০২৩ সালের মে মাসে অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তৈরি করেন শ্রিংলা। এরপর প্রথমে দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় হোর্ডিং। তারপর ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে শ্রিংলার নাম ও ছবি সহ হোর্ডিং লাগানো৷ আর এবারে জনসংযোগে নেমে বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক কাজের মাধ্যমে প্রচারে আসার চেষ্টা। সবটাই কী নিছকই তাঁর মানব দরদি চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ নাকি রাজনৈতিক মাঠে সুবিধার কৌশল তা নিয়ে রহস্য রয়েই যাচ্ছে।
নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি কাকে প্রার্থী করবে এনিয়ে ধোঁয়াশা ততই যেন ঘনীভূত হচ্ছে। একদিকে, দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ট এর আগেই হর্ষবর্ধন শ্রিংলার (Harsh Vardhan Shringla) হোর্ডিং লাগানো নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। এরপর তিনি সম্প্রতি প্রাক্তন বিদেশ সচিবের নিজেকে দার্জিলিংয়ের ‘ভূমিপুত্র’ দাবি করা নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। এখন দল বিস্টকে পুনরায় এই কেন্দ্রে প্রার্থী করবে নাকি শ্রিংলাকে টিকিট দিচ্ছে তা নিয়ে দলের অন্দরেও কম জলঘোলা হচ্ছে না।
আর এরইমাঝে জেলার বিভিন্ন জায়গায় একাধিক কর্মসূচি করছেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। যেমন এদিনই লিউসিপাকড়ি বাজারে বিজেপির (BJP) স্থানীয় মন্ডল সভাপতি বিশ্বনাথ রায় এবং দলের একাধিক কর্মীদের উপস্থিতিতে শ্রিংলা নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে ১০টি হুইলচেয়ার বিতরণ করলেন। এই হুইলচেয়ার বিতরণ প্রসঙ্গে শ্রিংলার কথা, বিশ্বনাথ রায় বেশ কয়েকজন স্থানীয় বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তির হুইলচেয়ার প্রয়োজন বলে জানান। এদিন তিনি সেই সমস্ত মানুষকেই হুইলচেয়ার তুলে দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
অন্যদিকে, আসন্ন দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন কিনা এই প্রশ্ন করতেই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভালো কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেন এবং সুকৌশলে প্রশ্ন এড়িয়ে সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বেরিয়ে যান শ্রিংলা। এই প্রসঙ্গে তাঁর কথা, ‘এটা মোদিজির গ্যারান্টির সময় চলছে। আমরা যা কথা দিই, তা পূরণ করি।’ এই কথার মাধ্যমে শ্রিংলা যে নিজের সমস্ত সুপ্ত বাসনা নিয়ে নরেন্দ্র মোদির উপরই ভরসা করে বসে আছেন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এদিকে, দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ট (Raju Bista) সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয়তা আরও বাড়াতে ফেসবুকে ফ্যান পেজ তৈরি করে বিজ্ঞাপন চালাচ্ছেন।
লোকসভা নির্বাচনের একদম প্রাক্কালে দু’জনের গতিবিধিতেই নিজেদেরকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যে রাজনৈতিক খেলা তা অনুমান করতে কারও সমস্যা হচ্ছে না। তবে, একাধিক জনগোষ্ঠীর মানুষে এই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি কাকে প্রার্থী করছে তা অবশ্য সময়ই বলবে। তবে, টিকিট যিনিই পান না কেন মানুষের সমস্যা সমাধানে যিনি কাজ করবেন, তাঁকেই প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান সাধারণ মানুষ তা বলা বাহুল্য। আর বিস্ট (Raju Bista) এবং শ্রিংলার রাজনৈতিক ময়দানে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা সময়ই বলবে।