উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: প্রত্যেক মহিলার ঋতুকালীন রক্তপাতের পরিমাণ আলাদা হয়, তবে একেবারে গড়ে হিসেব করলে বলা যায় যে একটি ঋতুচক্র মোটামুটিভাবে দিন পাঁচেক স্থায়ী হওয়ার কথা। মোট রক্তপাতের পরিমাণ ২-৩ টেবিলচামচের বেশি হওয়ার কথা হয়। যদি দেখেন যে প্রতিবার প্রায় সাতদিন স্থায়ী হচ্ছে ঋতুকাল, একবার ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই আবার শুরু হয়ে যাচ্ছে, প্রতি ঘণ্টায় প্যাড বা ট্যাম্পন পালটাতে হচ্ছে, রক্তের ডেলা বেরোচ্ছে প্রায়ই, রাতে ঘুমের মাঝে উঠে দেখছেন যে প্যাড ভিজে গিয়ে জামাকাপড় বা বিছানায় দাগ ধরছে, তা হলে বুঝে নিন যে আপনার অতিরিক্ত রক্তপাতের সমস্যা আছে। এই পরিস্থিতি আচমকাই তৈরি হয় না, নিশ্চয়ই আপনার কোনও শারীরিক সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই একের বেশি সাইকেলে এই ধরনের সমস্যা হলেই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
কোন কোন কারণে বাড়তি রক্তপাত বা মেনোরেজিয়া হয়?
এটা নিশ্চয়ই জানেন যে, ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের ভারসাম্যই ইউটেরাসের ভিতরের লাইনিং বা এন্ডোমেট্রিয়াম গঠন করে? মাসিক ঋতুচক্রের সময়ে এই এন্ডোমেট্রিয়ামটাই নির্গত হয় শরীর থেকে, কিছুদিনের মধ্যে ফের গড়ে ওঠে। হরমোনের স্তরে কোনও গোলমাল হলে এন্ডোমেট্রিয়ামও মোটা হয়ে যায়, ফলে রক্তপাতও বেশি হয়। যদি ওভারিতে কোনও সমস্যা থাকে, ইউটেরাসে ফাইব্রয়েড বা পলিপ তৈরি হয় তা হলে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে। অনেক সময়ে নন-হরমোনাল ইন্ট্রা ইউটেরাইন ডিভাইস শরীরে প্রবেশ করালে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও হেভি ব্লিডিং হতে পারে। আর প্রেগন্যান্সির মধ্যে রক্তপাত হলে বুঝতে হবে যে কোথাও কোনও সমস্যা তৈরি হয়েছে বলেই তেমনটা হচ্ছে।
সাবধানতা: অতিরিক্ত রক্তপাত থেকে কিন্তু অ্যানিমিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ডাক্তার দেখানো বা তাঁর পরামর্শ মেনে চলার পাশাপাশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খান। খুব বেশি রক্তক্ষয় হলে ক্লান্তিবোধ থাকবে, নিয়মিত কাজকর্ম করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে বিশ্রাম নিন, জোর করে কাজ করতে যাবেন না। ব্যায়াম করাও বন্ধ রাখুন ক’দিন। খুব বেশি রক্তপাত হলে কিন্তু আপনার কোষগুলি যথেষ্ট অক্সিজেন পাবে না, সে ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে একেবারেই দেরি করবেন না।