রায়গঞ্জঃ উত্তর দিনাজপুর জেলা বেড়েছে সাপের উপদ্রব। শীতকালেও দেখা মিলছে বিষধর সাপের। প্রায় প্রতিদিনই জেলার হাসপাতাল গুলিতে ভিড় জমাচ্ছে সাপে কাটা রোগীরা। গত ১ মাসে উত্তর দিনাজপুর জেলাতে সাপের কামড়ে কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। শীতকালে যেখানে সাপের শীতঘুমে থাকার কথা সেখানে উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চিকিৎসকদের। আবহাওয়ার সাপের এমন চরিত্রবদলে বিশ্ব উষ্ণায়নকেই দায়ী করেছেন সর্প বিষারদরা।
এবার উত্তর দিনাজপুর জেলায় শীতঘুম থেকে বিরত সাপেরা। বিশেষ করে শীতকালে ও বিষধর দাপাদাপি চিন্তা বাড়িয়েছে মাঠে ময়দানে কাজ করা চাষীদের। হাড় কাঁপানো শীতেও ঘটছে বিষধর সাপে কামড়ানোর মতন ঘটনা। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চিকিৎসকদের। সর্প গবেষক ও চিকিৎসকদের মাথা ব্যাথার কারণ সাপের এই চরিত্র পরিবর্তনে। বর্তমানে উওত্তর দিনাজপুর জেলায় দিনের তাপমাত্রা ১৯-২০ ডিগ্রী থাকলেও রাতে তার নেমে যাচ্ছে ১২-১৩ ডিগ্রিতে। তা সত্ত্বেও চলছে বিষধর সাপের দাপাদাপি। জেলার হাসপাতালগুলিতে প্রতিদিনই ভর্তি হতে আসছেন সাপেও কাটা রোগীরা। হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম দিয়ে চলছে চিকিৎসা।
মঙ্গলবার রাতেও সাপ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিরপর গ্রামে। সেই গ্রামের বাসিন্দা গুলজার আলীর বাড়ির শোয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি বিষধর সাপ। এদিনই আরও একটি বিষধর সাপ উদ্ধার হয়েছে ইটাহার থানার সুরুন টু গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিজোল গ্রামের মীরজাফর আলীর বাড়ির বিছানা থেকে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত একমাসে উত্তর দিনাজপুর জেলায় সাপে কেটে মৃত্যু হয়েছে দশ জনের।
জানা গিয়েছে মৃতদের বাড়ি রায়গঞ্জ মহকুমার ইটাহার, রায়গঞ্জ হেমতাবাদ ও করণদিঘী এলাকার। কালাচ নয় এখন বেশি দেখা যাচ্ছে কেউটের কামড়। এর পেছনে বিশ্ব উষ্ণায়ন কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সর্প বিষারদরা। তাছাড়া সাপেদের বাসস্থান ও কমে যাচ্ছে। চারিদিকে কংক্রিটের জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে এর ফলে সাপেদের এই চরিত্রগত পরিবর্তন বলে মনে করছেন। প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, সর্বনিম্ন ১১ এবং সর্বোচ্চ ২৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে সাপ। শীতকালে ১০-১১ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নেমে গেলে সাপের শারীরিক ক্রিয়া-কলাপ বন্ধ হয়ে যায়। শীতঘুমে চলে যায় সাপ। সাপ সাধারণত শীতকালে প্রায় কিছুই খায় না তাই কার্যক্ষমতা অনেক দুর্বল হয়ে যায় অথচ দেখা যাচ্ছে বর্তমানে শীত কালেও সাপ যথেষ্ট সক্রিয়। সাপেদের ক্ষেত্রেও বিষধর গোখরোদের দাপট বেশি। সাপেদের এই চরিত্র পরিবর্তন প্রভাব ফেলবে পরিবেশ ও বাস্তু তন্ত্রের উপর এমনই মত বিশেষজ্ঞদের।