রায়গঞ্জঃ ইজরায়েলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই দেশে ফিরে এসেছিলেন রায়গঞ্জের ইন্দিরা কলোনির বাসিন্দা জগন্নাথ সূত্রধর। সে ইজরায়েলের বার-ইলান ইউনিভার্সিটিতে পদার্থবিদ্যা বিষয়ে ২০২২ সাল থেকে পোস্ট ডক্টরেট করছে। যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার পর আর ইজরায়েলে ফিরতে পারেনি সে। ফলে সেখানে ফিরতে না পেরে কার্যত হতাশ জগন্নাথ।
রায়গঞ্জের ইন্দিরা কলোনির বাসিন্দা পেশায় সাইকেল মিস্ত্রি বিনয় পদ সূত্রধরের ছেলে জগন্নাথ সূত্রধর। বয়স ৩০ বছর। বর্তমানে সে ইজরায়েলের বার-ইলান ইউনিভার্সিটিতে পদার্থবিদ্যা বিষয়ে ২০২২ সাল থেকে পোস্ট ডক্টরেট করছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরুতে একটি সেমিনারে যোগ দেওয়ার পর সে রায়গঞ্জের বাড়িতে ফিরে এসেছে। এরপর যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় অশান্ত ইজরাইলে আর ফিরে যেতে পারেনি। কবে ফিরে যেতে পারবেন তিনি বুঝতে পারছে না। জগন্নাথ জানান, ইউনিভার্সিটিতে যার তত্ত্বাবধানে তিনি গবেষণা করছেন, তিনিও ইতিমধ্যে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। অন্য আরেকজন গাইডকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বর্তমানে অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
একেবারেই নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে জগন্নাথ। বাবা বিনয়পদ সূত্রধর পেশায় সাইকেল মিস্ত্রি। আর্থিক অনটনের মধ্যদিয়েই চলে সংসার। এত অনটনের মধ্যেও ছেলেকে জীবনে প্রতিষ্ঠিত করবার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন আজ তার বাস্তবায়নের পথে। রায়গঞ্জের রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবন থেকে ২০০৯ সালে মাধ্যমিক ও ২০১১ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে সে। এরপর আইআইএসটি বেঙ্গালুরু থেকে মাস্টার ডিগ্রী ও পিএইচডি সম্পূর্ণ করে বর্তমানে সে ইজরাইলে গবেষণা করছে।
বাবা বিনয় পদ সূত্রধর জানান, এই এলাকায় একমাত্র জগন্নাথ বিদেশে পড়াশোনা করায় খুব ভালো লাগে। সকলে খুশি। আগামীতে সে যদি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তাহলে আরও খুশি হব। বাবা হিসেবে খুব গর্ব হয়। তিনি আরও বলেন, ছেলে ওই দেশে ফিরে গেলে চিন্তায় থাকতে হবে। ও তো যুদ্ধের আগে এসেছে তাই দুশ্চিন্তাটা নেই। মা সন্ধ্যা সূত্রধর জানান, ছেলের পড়াশোনা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছি। আবার ছেলেকে সে দেশে পাঠাতেও বুক কাঁপে। জগন্নাথ জানায়, আজ বিদেশে পড়াশোনা করছি বিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলীর ও কয়েক শুভানুধ্যায়ী মানুষজনের সহযোগিতার কারনেই। সবাই সহযোগিতা না করলে এভাবে এগ্রিয়ে যেতে পারতাম না।