জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) পান্ডাপাড়ার বাসিন্দা যাদবপুরের বিদায়ি সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)। মিমির বাড়ির পাশেই কোরানিপাড়া (Koranipara) গ্রাম। কোরানিপাড়ার অদূরেই কানাপাড়া। উন্নয়নের দিক থেকে স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, কানাপাড়া ‘কানা’ই হয়ে রয়ে গিয়েছে। এই কথা শোনার পর কিছুদূর এগোতেই চোখে পড়ল তিস্তার বিশাল ক্যানাল (Teesta Canal)। ক্যানাল দিয়ে ঘোলাটে জল বয়ে যাচ্ছে। ক্যানালের পাশের জমিতে সেচের জল সরবরাহ করা হচ্ছে না। ক্যানালটি খানাখন্দে ভর্তি। সেচের জলের পুরোপুরি অপচয় হচ্ছে। রাস্তার ধারে দোকানে বসে ক্লান্তি দূর করার জন্য ঠান্ডা জল পান করছিলেন নারায়ণ দাস। সেচের জলের প্রসঙ্গ তুলতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তিনি। বললেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে তিস্তা সেচপ্রকল্পের কাজ আজও শেষ করা গেল না। যেটুকু কাজ হয়েছে তা থেকেও পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। ক্যানালের দিকে চোখ রাখলেই বুঝতে পারবেন কানাপাড়ার কী পরিণতি।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এপ্রিল মাসে জল দেওয়া হচ্ছে। অথচ সেচের জল পৌঁছানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। কানাপাড়া, কোরানিপাড়া, দেউনিয়াপাড়া, বরুয়াপাড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মূলত ধান, পাট হয়। এবারে ধানের দাম তলানিতে এসে পৌঁছেছে। কৃষকদের দুর্দশার কথা কেউ মাথায় রাখে না। বিজেপি, তৃণমূল সহ কোনও রাজনৈতিক নেতাকে তাঁরা বিপদের সময়ে পাননি। কিন্তু ভোটের সময়ে নেতাদের দেখা যায়।
বলাই রায় কৃষক পরিবারের সন্তান। তিনি বরুয়াপাড়ার বাসিন্দা। বলাই জানালেন, কোনও শিল্প না হওয়াতে এখানকার গ্রামের ছেলেরা কাজের সন্ধানে কেরল এবং দিল্লিতে গিয়েছে। সামান্য পারিশ্রমিকে ভিনরাজ্যে কাজ করতে হচ্ছে।
সানুপাড়ার বাসিন্দা শম্ভু দাস বলেন, ‘কানাপাড়ার মতোই আমাদের গ্রামেও উন্নয়ন হয়নি।’ অমূল্য রায় নামে এক বাসিন্দা কোরানিপাড়ায় ঢোকার মুখের প্রবেশপথের একটি সেতু দেখিয়ে তিনি বলেন, গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধার্থে অনেকগুলি সেতু নির্মাণের কথা বলা হলেও জনপ্রতিনিধিরা মৌনই থেকেছেন। কানাপাড়ার সাধারণ কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, বিগত পাঁচ বছরে তাঁদের গ্রামে সাংসদকে একবারও দেখা যায়নি। ইচ্ছে থাকলেও সাংসদের কাছে দরবার করতে পারেননি গ্রামবাসী।