সোনাপুর: একটি মাঠ। আর সেখান থেকেই একের পর এক সাফল্য। মাস কয়েক আগে ওই মাঠ থেকেই রাজ্য পুলিশে সফলতা পেয়েছেন কয়েকজন। সম্প্রতি আধাসামরিক বাহিনীর পরীক্ষায় সফল হয়ে বিভিন্ন বাহিনীতে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় কয়েকজন। ওই মাঠই যেন চমৎকারী মাঠ হয়ে গিয়েছে। যেখানে গেলে চাকরির পরীক্ষায় সফলতা আসছে। এটা আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের মথুরা চা বাগানের মাঝে লাল স্কুলের মাঠ। চা মহল্লার দোশাই লাইনের এই মাঠে ব্লকের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে যুবকরা ভিড় করেন। আর দল বেঁধে হয় শারীরিক কসরত।
নিয়মিত দৌড়, ব্যায়ামের মাধ্যমেই সফলতার দর্শন পেয়েছেন অনেকেই। গত সপ্তাহেই স্টাফ সিলেকশন কমিশনের মাধ্যমে হওয়া কেন্দ্রীয় আট বাহিনীর পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল বের হয়েছে। এই ফল বের হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে এই মাঠে যাঁরা কসরত করে তাঁদের মধ্যে অনেকেই সফল হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত যা হিসেব তাতে দেখা যাচ্ছে আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের এবং কোচবিহার-২ ব্লকের যে যুবকরা এই মাঠে আসে তাঁদের মধ্যে ১৫ জনের বেশি সফল হয়ে চাকরিতে যোগ দিতে চলেছে। এই খবরের পর মাঠে আরও ভিড় বাড়ছে কিশোর এবং যুবকদের। তাঁদের মধ্যে কারও লক্ষ্য ভারতীয় সেনায় যোগ দেওয়া। কারও লক্ষ্য আধা সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া, আবার কারও বা রাজ্য পুলিশে।
এই মাঠের এই সফলতার রহস্যটা কী? এই বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেল, আর পাঁচটা মাঠের মতই এই মাঠটাও। এখানে কোনও প্রশিক্ষক নেই। যুবকরা দল বেঁধে এসে কসরত করেন। কেউ সকালে, কেউ দুপুরে, কেউ আবার বিকেলে। তবে মাঠ অনেক পরিষ্কার এবং সমান্তরাল হওয়ায় দৌড়ের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। মাঠের মধ্যে ৩০০ মিটারের ট্রেক সবসময় ব্যস্ত থাকে। আর অনেকজন একসঙ্গে থাকায় প্রতিযোগিতায় অনেকটাই সুবিধা হয় বলে মত সদ্য আধা সামরিক বাহিনীতে চাকরি পাওয়া অমিত রায়ের। বাবুরহাট এলাকার ওই যুবক বিএসএফে সুযোগ পেয়েছে। এদিন তিনি বলেন, ‘মাঠে অনেকেই একসঙ্গে দৌড়তাম। পরীক্ষার প্রস্তুতি সবাই নিজের মতো নিয়েছে। আর সফল হওয়ার পর একসঙ্গে দৌড় প্র্যাকটিস করেছি।’
মথুরার ওই মাঠ ওই এলাকার যুবকদের পাশাপাশি চকোয়াখেতি অঞ্চলের বেশ কয়েকজন যুবক কসরত করতে যেত। ওই মাঠে যাওয়া ওই অঞ্চলেরই ৮ জন সম্প্রতি আধা সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ পেয়েছে। মাঠে গিয়ে যে অনেকটাই লাভ হয়েছে সেটা মানছেন সিআইএসএফে নিয়োগ পাওয়া সুকোমল রায় এবং সিআরপিএফে নিয়োগ পাওয়া প্রণয় রায়দের মতো অনেকেই। ওই মাঠের পাশাপাশি মথুরা চা বাগানের রাস্তাতেও বেশ কয়েকজন যুবক চাকরির পরীক্ষার শারীরিক পরীক্ষার প্রস্ততি নেয়। তাঁদের অনেকে আধা সামরিক পরীক্ষায় সফল হলেও চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ হয়েছে। তবে লাল স্কুলের মাঠের এতজনের সাফল্য আরও বেশ কয়েকজন যুবককে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।