উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বেঙ্গালুরুর প্রভাব বাংলায়। লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে বেঙ্গালুরুতে যখন ২৬টি বিরোধী দল ব্যস্ত আলোচনায়, ঠিক তখনই বাম-কংগ্রেস-তৃণমূলের সর্বভারতীয় সমঝোতা নিয়ে বাংলায় সোশাল মিডিয়ায় ভেসে উঠছে সিপিএম এবং কংগ্রেসের একাংশ যুব নেতার হুঙ্কার।
ইদানীং বাংলায় কংগ্রেস নেতা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীন বেশ পরিচিত মুখ। মঙ্গলবার কৌস্তভ তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে রাহুল গান্ধির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে বাংলায় কংগ্রেসের অনেকেই দল ছাড়বেন। আরও একধাপ এগিয়ে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি হাওড়ার পাঁচলার যুব নেতা শেখ ওবাইদুল্লার হুঁশিয়ারি, ‘মোদি বিরোধের নামে তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে বিজেপি হয়ে যাব! কথা ক্লিয়ার, কোনও ভেজাল নেই!’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, কৌস্তভ বা ওবাইদুল্লারা প্রতীকি মাত্র। সোমবার সন্ধে থেকই সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে এমন হাজারো ‘প্রতিবাদী’ পোস্ট। সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত ভোটের রেশ এখনও কাটেনি। ভোটের সময় থেকে শুরু করে এখনও শাসকদলের বিরুদ্ধে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব বাম, কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্বরা। হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। এখনও বহু কর্মী ঘরছাড়া রয়েছেন বলেও দাবি বাম-কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্বের। এমন আবহে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্বর বৈঠক-আলোচনা ভাল চোখে দেখছেন না নিচুতলার একাংশ কর্মী, সমর্থকরা।
বাংলায় পঞ্চায়েত সন্ত্রাস নিয়ে কৌশলগত ভাবে রাহুল-সীতারামরা চুপ রয়েছেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মতে, সর্বভারতীয় রাজনীতির নিরিখে বাম, কংগ্রেস বা তৃণমূলের মূল লক্ষ্য হল বিজেপিকে রুখে দেওয়া। তার সঙ্গে রাজ্যস্তরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।
তবে এমন তত্ত্ব মানতে নারাজ কৌস্তভ, ওবাইদুল্লার মতো যুব নেতারা। ফেসবুকে হাওড়ার পাঁচলার সিপিএমের যুব নেতা শেখ ওবাইদুল্লার হুঁশিয়ারি, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিরোধের কারণে যারা আমাদের সুখ, শান্তি, বাড়ি ব্যবসা, বাচ্চাদের লেখাপড়া, ভবিষ্যৎ কেড়ে নিয়েছে, কয়েকবার জেল, কয়েকবার প্রাণঘাতী হামলা করে রক্তাক্ত করেছে, সেই দল তৃণমূলের সঙ্গে মোদী বিরোধের নামে বামেদের জোট হলে, বিজেপি হয়ে যাব!’। রাহুল গান্ধীকে লেখা চিঠিতে কৌস্তভও দলবদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সর্বভারতীয় জোটকে ঘিরে নিচুতলার ক্ষুব্ধ বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের হুঁশিয়ারি সত্যি হলে বঙ্গে গেরুয়া দাপট বাড়বে কি না, তা নিয়েও নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে।