সুবীর মহন্ত ও চন্দ্রনারায়ণ সাহা, বালুরঘাট ও রায়গঞ্জ: আদালতের নির্দেশে তাঁরা এখনও চাকরিহারা। কিন্তু এখনও ‘নির্বাচন কর্মী’। তাই ডিসিআরসি থেকে বুথের উদ্দেশে রওনা দিলেন রাকেশ আলম, দেবপ্রিয়া কর্মকার, প্রিয়াংকা চৌধুরীরা। বৃহস্পতিবার বালুরঘাট (Balurghat) ও রায়গঞ্জ (Raiganj), দুই কেন্দ্রেই এই ছবি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রায় ৩০০ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। প্রায় ২০০ জন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা একযোগে জেলা নির্বাচনি আধিকারিককে চিঠি দিয়ে এই ডিউটি থেকে অব্যাহতির আবেদন জানান। কিন্তু সেই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। তাই চাকরি হারানোর হতাশা নিয়েও এদিন ভোটের (Lok Sabha Election 2024) ডিউটি করতে রওনা দেন চাকরিহারারা।
চাকরিহারা ভোটকর্মী রাকেশ আলম বলেন, ‘আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই আমাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। আমরা সুপ্রিম কোর্টে (Supreme court) যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছি। তাই নির্বাচন পরিচালনার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে জেলা নির্বাচন আধিকারিককে চিঠি দিয়েছিলাম। সেই আবেদন গ্রাহ্য না করে আমাদের ভোটের ডিউটিতে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে যদি আমাদের শারীরিক কোনও ক্ষতি হয় বা অন্য কোনও ঘটনা ঘটে তার দায়িত্ব কে নেবে?’ চাকরিহারা দেবপ্রিয়া কর্মকার বলেন, ‘আমরা স্বচ্ছভাবে চাকরি পেয়েছি। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য পুরো প্যানেল বাতিল হয়ে গিয়েছে। আমরা এমনটা আশা করিনি। মন খারাপ হলেও ডিউটিতে যেতে হচ্ছে।’
রায়গঞ্জের দেবীনগর কৈলাস স্কুলের অর্থনীতির শিক্ষিকা পদে ছিলেন প্রিয়াংকা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা যাঁরা নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি, তাঁরা নিজেদের যোগ্যতা জানি। তাই মন খারাপ থাকলেও ভোটের ডিউটি করতে এসেছি। ঘরে বসে থাকলে ভোটকর্মী হিসাবে জীবনে প্রথমবার এমন সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হত। এত বড় একটা দায়িত্ব থেকে দূরে থাকলে অবসাদ আরও গ্রাস করত। তাই ভোটকর্মী হয়ে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাই। হাইকোর্ট পুরো প্যানেল বাতিলের আদেশ দিলেও আমাদের নিয়োগ দিয়েছে পর্ষদ। পর্ষদ তো আমাদের ভোটের ডিউটি পালনে বাধা দেয়নি! তাই মাথা উঁচু করে ভোটকর্মীর ডিউটি পালন করতে এসেছি। বহু মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়ে ভালো লাগছে।’ রায়গঞ্জ গার্লস স্কুলের মহিলা বুথে প্রিয়াংকার ডিউটি। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বেশ কিছু চাকরিহারা ভোটের ডিউটি করতে আসেননি।
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় শুনেছি। যেহেতু নির্বাচন কমিশন বা রাজ্য সরকারের তরফে এনিয়ে কোনও নির্দেশ আসেনি, তাই নিজেদের প্ল্যানেই আমরা এগোচ্ছি।’