বিদেশ বসু, মালবাজার: মাল শহরের ঠিক পাশেই ক্ষুদিরামপল্লি। এখনও পথবাতি নেই। সন্ধ্যার আঁধারি পথ। মাঝে মাঝেই কানে আসে ঝিঁঝিপোকার ডাক। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানেই উৎসবের আলো। গোটাটাই বণিক পরিবারকে ঘিরে। যাকে ঘিরে এই আনন্দ সেই পম্পা বণিক এবারের মাধ্যমিকে ৬২৯ পেয়ে তাক লাগিয়েছে। মাল শহরের সুবাসিনী উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ে সেরা হয়েছে সে। মহকুমার সম্ভাব্য স্থানাধিকারীদের তালিকাতেও রয়েছে।
এই সেরা হওয়ার পথ কিন্তু সুগম নয়। পম্পার বাবা খুচরো লটারি বিক্রেতা। নিরন্তর জীবন যুদ্ধের সংগ্রাম চালায় গোটা পরিবার। সেখানে পম্পাই এখন আশার আলো। মাল শহরের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল এবার মোটেই আশানুরূপ নয়। সেখানে সুভাষিনী উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ের পম্পা এবং আরও কয়েকজন পরীক্ষার্থীদের ফলাফল আশার আলো সঞ্চার করছে। পম্পার বাংলা প্রাপ্ত নম্বর ৯০, ইংরেজিতে ৯২, ভৌত বিজ্ঞান ৯৮, জীবন বিজ্ঞান ৯৬, অঙ্ক ৭৭, ইতিহাস ৮০, ভূগোল ৯৬। পড়াশোনোর পাশাপাশি ছবিও আঁকে পম্পা। সে জানায়, ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায়।
পম্পার বাবা জয়শংকরবাবু বলেন, ‘আমরা যতটা পারি মেয়েকে উৎসাহ জুগিয়েছি। আর্থিক সমস্যা রয়েছে। দেখা যাক কতটা এগোতে পারে।’ মা জয়ন্তী বণিক গৃহবধূ। জয়ন্তীদেবী বলেন, ‘হয়তো আরও একটু পরিকাঠামো পেলে, আরেকটু এগোতে পারত। পম্পার কাছে স্মার্ট ফোন না থাকায়, সেভাবে অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারেনি।’ পম্পার বড় দাদা দীপ লটারি বিক্রির পাশাপাশি সিসিটিভির সারাইয়ের কাজ করে। আর এক দাদা জ্যোতির্ময় গাড়ি চালানো শিখছেন। গোটা পাড়ার যেন আশার আলো এখন পম্পা।