শুভঙ্কর চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (North Bengal University) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার (Registrar) স্বপন রক্ষিত, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেস সুপারভাইজার ইন্দ্রনীল রায় এবং গ্রুপ-সি কর্মী সুমন চট্টোপাধ্যায়ের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে বড়সড়ো অনিয়মের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের (TMC) দার্জিলিং জেলা কমিটির মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত। দীর্ঘদিন থেকেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি নিয়ে সরব রয়েছেন বিরোধীরা। এবার শাসকদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলায় শোরগোল পড়েছে সব মহলেই। আরও আটজন শিক্ষক, আধিকারিক ও শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ, পদোন্নতি সহ বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্যও খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ্যে আনা হবে বলেও জানিয়েছেন বেদব্রত।
তাঁর বক্তব্য, ‘দুর্নীতির বহু নথি আমাদের হাতে আছে। আরও কিছু তথ্য জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ইতিমধ্যেই তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেছি। প্রাথমিকভাবে মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। আরও কয়েকজনের সম্পর্কে নথি জোগাড়ের চেষ্টা হচ্ছে। কেউ কেউ নিময় ভেঙে লক্ষ লক্ষ টাকা বাড়তি নিয়ে বসে রয়েছে।’ সবটা নিয়ে আইনানুগ পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছেন তিনি।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই অভিযোগ তুলেছেন বেদব্রত। তাঁর অভিযোগ, ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে যোগ দেওয়ার তিন বছর পর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর র্যাংকের বেতন পাওয়ার কথা স্বপনের। কিন্তু সেই নিয়ম ভেঙে রাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়াই, যখন থেকে তিনি কাজে যোগ দিয়েছেন, তখন থেকেই বর্ধিত বেতন নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক লক্ষ টাকা বাড়তি নিয়ে নিয়েছেন।
স্বপন অবশ্য অভিযোগের কথা মানতে চাননি। তাঁর কথা, ‘যা হয়েছে সবটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনে এবং কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত অনুসারে। কোনও বাড়তি টাকা আমি গ্রহণ করিনি বা নিময় ভেঙে আমার পদোন্নতি হয়নি। যদি তথ্য আইন মেনে কেউ চিঠি পাঠিয়ে থাকে, সেই চিঠি পেলে উত্তর দেওয়া হবে।’
এছাড়া গ্রুপ-সি কর্মী সুমনের নিয়োগকেই বেআইনি বলেছেন বেদব্রত। তাঁর অভিযোগ, অস্থায়ী কর্মী হিসাবে আইন কলেজে কাজে যোগ দিয়েছিলেন সুমন। সেই কলেজ আইন বিভাগ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর কোনও বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষা, ইন্টারভিউ ছাড়াই সুমনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী কর্মী হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সুমনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে বদলিও করা হয়। আর সুমনের বক্তব্য, ‘যে কেউ অভিযোগ তুলতেই পারে। যারা অভিযোগ তুলছে তাদের কাছে নথি থাকলে তারা যা করার করুক। ওসব নিয়ে ভাবছি না।’
স্নাতক স্তরের যোগ্যমান না থাকা সত্ত্বেও সুপরিকল্পিতভাবে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রেস সুপারভাইজার পদে ইন্দ্রনীলকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেই অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল মুখপাত্র। যদিও অভিযোগ নিয়ে ইন্দ্রনীলের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন তোলেননি।