মানিকচক: বহুদিনের পথ চলতি সরকারি রাস্তা দখল করল এক পরিবার। দখলকারীদের হুমকি, রাস্তাটি নাকি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। তাই শুধুমাত্র হাঁটা ছাড়া এই রাস্তা ব্যবহার করতে পারবেন না গ্রামবাসীরা। বড় যানবাহন তো নয়ই এমনকি বাইক, টোটো, ভুটভুটি নিয়ে যাতায়াতে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দখলকারীরা। তবে রাস্তাটি আবার সরকারি খরচে লাল মাটির তৈরি। আর এই রাস্তায় যাতায়াত নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বচসা দখলদারীদের। গত সোমবার রাতে এই বচসা চরমে ওঠে। শেষমেষ দখলকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয় গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি মানিকচকের নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াপাড়া এলাকার।
নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাজিরপুর হাইস্কুল সংলগ্ন গ্রাম নয়াপাড়া। প্রায়ই ৯০টি পরিবারের বাস ওই গ্রামে। নাজিরপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে নাজিরপুর গ্রাম পর্যন্ত রয়েছে সরকারি পিচের রাস্তা। এই সরকারি বড় পিচ রাস্তা থেকে নয়া পাড়ার দূরত্ব ৮০-৯০ মিটার। আর সমস্যা সরকারি পিচের রাস্তা থেকে নয়াপাড়া গ্রাম সংযোগকারী রাস্তাটি নেই। বেশ কয়েক বছর আগে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির বরাদ্দে লাল মাটির রাস্তা নির্মিত হয়। এই গ্রামে বিশেষত সরকার ও ঘোষ সম্প্রদায়ের বসবাস। তবে গ্রামের শুরুতেই সাহা পরিবারের বাস। আর এই সাহা পরিবারের দাবি, ওই মাটির রাস্তাটি সর্বসাধারণের জন্য বরাদ্দ নয়। এই রাস্তাটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। এমনকি সর্বসাধারণের জন্য ব্যবহৃত এই রাস্তার মাঝে একপ্রকার জোড়পূর্বক নলকুপ নির্মাণ করেন সাহা পরিবারের লোকজন। সরকারি রাস্তাটি সাহা পরিবারের লোকজন একেবারে গোয়ালঘর হিসেবে ব্যবহার করছেন। আর এই নিয়ে প্রতিবাদ করলেই হুমকির শিকার হতে হয় গ্রামবাসীদের।
জানা গিয়েছে, গত সোমবার রাস্তার উপর গোরু ও জমির পাট রাস্তার উপর রেখেছিল সাহা পরিবারের লোকেরা। প্রয়োজনীয় সামগ্রী সহ ভুটভুটি চালক রাস্তাটি পেরোতে গিয়ে ভুটভুটি গাড়ির হ্যান্ডেলে লেগে ত্রিপল ছিড়ে যায়। আর ত্রিপল ছেড়ার ঘটনা ঘটতেই সাহা পরিবারের লোকজন চড়াও হয় ভুটভুটি চালকের বিরুদ্ধে। সাহা পরিবারের লোকজনদের দাবি, এই রাস্তায় ভুটভুটি নিয়ে যাতায়াত করা যাবে না। আর এতেই শুরু হয় বচসা। উত্তেজনা চড়ে ওঠে। পরে ঘটনাস্থলে মানিকচক থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তবে এই ঘটনা নিয়ে গত দুইদিন থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা। তারপরই প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গ্রামবাসীরা। রাস্তা দখলকারী বিকাশ সাহা, সুভাষ সাহা, প্রদীপ সাহা, পাঁচু সাহা সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মানিকচক থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে গ্রামবাসীরা। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নেমেছে মানিকচক থানার পুলিশ।