বালুরঘাট: শোচনীয় অবস্থা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গ্রন্থাগারগুলির। বর্তমানে কর্মী সংকট প্রবল আকার ধারণ করেছে। একজন গ্রন্থাগার কর্মী সামলাচ্ছেন একাধিক গ্রন্থাগার। যার জেরে কোথাও সপ্তাহে দুদিন, আবার কোথাও একদিন খুলছে গ্রন্থাগার। ডিজিটাল যুগে আরও বইবিমুখ হচ্ছে নব্যরা। যেখানে রাজ্য সরকার ও গ্রন্থাগার দপ্তর থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের কথা বলা হচ্ছে। সেখানে এই খামখেয়ালী মনোভাব দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কার্যত আক্ষেপ প্রকাশ করছেন বইপ্রেমীরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাজুড়ে বিভিন্ন গ্রামীণ ও শহর অঞ্চলে অবস্থিত পাবলিক লাইব্রেরিগুলির অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন। প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী সংখ্যা অর্ধেক। যার ফলে এক একজন কর্মীর দায়িত্বে একাধিক গ্রন্থাগার রয়েছে। যেখানে পালা করে কোথাও সপ্তাহে দুই দিন কোথাও একদিন করে কর্মীরা গ্রন্থাগার খোলেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই। অনিয়মিতভাবে খোলার জন্য এখন আর পাঠক গ্রন্থাগারে আসেন না। বই থাকলেও তার রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য কোনও ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ গ্রামীণ গ্রন্থাগারে উইপোকা বাসা বেঁধেছে। ফলে নষ্ট হয়েছে বহু বই। অবশ্য চলতি বছরে জেলায় কিছু কর্মী নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় গ্রামীণ অঞ্চলে গ্রন্থাগার রয়েছে ৫২টি, শহরাঞ্চলে ৪ ও জেলা সদরে একটি। অর্থাৎ মোট গ্রন্থাগারের সংখ্যা ৫৭। এখনও পর্যন্ত জেলায় মোট কর্মী সংখ্যা ৩৬। চলতি আর্থিক বছরে ৩৭টি শূন্য পদের মধ্যে ১৪টি পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু নিয়োগের সরকারি নির্দেশ বা ক্রাইটেরিয়া পূরণ না হওয়ায় মাত্র দশটি পদে এখনও পর্যন্ত নির্বাচন করা গিয়েছে। ফলে কর্মী সমস্যা এখনও সম্পূর্ণ মেটেনি। তাই বই লেনদেন বা আগের মতো প্রচুর সংখ্যায় পাঠক এখন আর নেই। ফলে অধিকাংশ গ্রন্থাগারের অবস্থা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।
জেলা গ্রন্থাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫২টি গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলির জন্য ১৭ জন কর্মী রয়েছে। ফলে একজন কর্মী কার্যত তিনটি করে গ্রন্থাগারের দায়িত্বে রয়েছেন। তাই নিয়মিত গ্রন্থাগার খোলা হচ্ছে না। একমাত্র জেলার প্রধান গ্রন্থাগার ছাড়া গ্রামীণ ও শহরের সব গ্রন্থাগার সপ্তাহে দুই দিন, কোথাও বা একদিন করে খোলা হয়। একজন গ্রন্থাগারিক বিভিন্ন লাইব্রেরিতে ঘুরে দরজা খোলেন। নতুন নির্বাচিত ১০ জন কর্মী এখনও নিযুক্ত হয়নি।
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা জানান, ১৪ জন কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। যেখানে দশজনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।