সানি সরকার, শিলিগুড়ি: সেই অর্থে দেখতে গেলে উত্তরবঙ্গ (North Bengal) পদ্মের ঘন বন। সাংসদ থেকে শুরু করে বিধায়ক, সিংহভাগই পদ্মের প্রতিনিধি। কিন্তু সেই পদ্মবনেই এখন অনেক কাঁটা ছড়িয়ে। কেউ টিকিট না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন দলে, কেউ আবার আলাদা রাজ্যের দাবিতে সুর চড়িয়ে বাঁকা নজরে পড়েছেন। শনিবার শিলিগুড়ির (Siliguri) কাওয়াখালিতে বিজয় সংকল্প সভায় সেই কাঁটা সরানোই যেন চ্যালেঞ্জ নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) কাছে।
আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) লোকসভা আসনে এবার মনোজ টিগ্গাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। আর তারপরই প্রকাশ্যে বিষোদ্গার শুরু করেছেন বর্তমান সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী জন বারলা। উত্তরবঙ্গে মোদির সভায় তিনি থাকবেন কি না জানতে ফোন করা হয়েছিল বারবার। কিন্তু সাড়া দেননি মন্ত্রী। ফলে জল্পনা, মোদির সভা এড়িয়ে যেতে পারেন বারলা। সভার আয়োজক শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরুণ মণ্ডল অবশ্য বলছেন, ‘সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উনি কী করবেন জানি না।’
দলে বিদ্রোহী হয়ে ওঠা কার্সিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ বজগায়েন যেমন মোদির সভায় যোগ দিচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বিষ্ণুর ছেলে প্রশান্তর সাফাই, ‘বাবা ক’দিন ধরে খুব অসুস্থ। তাই প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দিতে পারছেন না।’ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়িতে পৃথক রাজ্যকে সামনে রেখে বৈঠক করেছিলেন কার্সিয়াংয়ের বিধায়ক। ওই বৈঠকে সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে ছিলেন গাজোলের বিধায়ক চিন্ময় দেববর্মন। এদিন তিনিও উত্তরবঙ্গ সংবাদকে বলেছেন, ‘সভায় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে দলীয় কোনও নির্দেশ নেই। তাই প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাচ্ছি না।’ তবে কাওয়াখালির সভায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন সত্যেন্দ্রনাথ।
ক’দিন আগে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন রায়। তিনি অবশ্য মোদির সভায় থাকবেন বলে এদিন জানিয়েছেন।
এদিকে, এই সভার পুরো দায়িত্ব কার্যত নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন রাজু বিস্ট। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি টিকিট পাবেন তো, ফিশফাশ চলছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তাই রাজুকে নিয়ে মোদি কোনও বার্তা দেন কি না, সেদিকে নজর রয়েছে পাহাড়-সমতলের।
লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ না হলেও মার্চের প্রথম সপ্তাহেই দক্ষিণবঙ্গে তিন-তিনটি সভা করে ফেলেছেন মোদি। এবার তাঁর নজর উত্তরবঙ্গে। ভোটের নিরিখে প্রথম সভাটি রয়েছে শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে। আগে ঠিক ছিল বিকেল ৫টা নাগাদ বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন মোদি। তারপর সড়কপথে কাওয়াখালিতে। কিন্তু শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজু বিস্ট বলেন, ‘বাগডোগরায় প্রধানমন্ত্রী পৌঁছাবেন দুপুর ৩টায়। ৫টার মধ্যে সভা শেষ হয়ে যাবে।’