প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে নেপালের ঝাঁপা পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার বিস্তৃত পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন প্রকল্পে সবুজ সংকেত দিল কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার এই প্রকল্পটি নিয়ে ভারত-নেপাল উভয় সরকারের মধ্যে মউ স্বাক্ষরিত হয়। বৃহস্পতিবার দিল্লির ‘হায়দ্রাবাদ হাউসে’ এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুস্পকমল দহল ‘প্রচণ্ড’।
শক্তি, যোগাযোগ, বাণিজ্যের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে, ভারত ও নেপাল দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। অর্থনীতি, সীমান্ত সমস্যা এবং পরিকাঠামোর উন্নয়নের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে। বাণিজ্য ও জ্বালানি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে দুই পক্ষের মধ্যে সাতটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম শিলিগুড়ি-ঝাঁপা পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন স্থাপনা সম্পর্কিত চুক্তি।
প্রসঙ্গত, ক্রশ বর্ডার পেট্রোলিয়াম পাইপলাইনের পরিধি বৃদ্ধি সম্পর্কিত তিনটি ‘মউ’ চুক্তি এদিন স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে মোতিহারি-আমলেখগঞ্জ পাইপলাইনকে আমলেখগঞ্জ থেকে চিতওয়ান পর্যন্ত প্রসারিত করা, চিতওয়ান এবং ঝাঁপা-তে টার্মিনাল ব্যবস্থা গড়ে তোলা, শিলিগুড়ি থেকে ঝাঁপা পর্যন্ত নতুন পাইপলাইন স্থাপন করা অন্যতম। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলি ‘বিটুবি’ মডেলের অধীন ভারতের ‘আইওসিএল’ এবং নেপালের ‘নেপাল ওয়েল কর্পোরেশন’-এর মধ্যে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন ওলি সরকারের জমানায় নেপাল সরকারের তরফে ভারতের কাছে দুটি নতুন পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়৷ এর মধ্যে একটি মোতিহারি-আমলেখগঞ্জ পাইপলাইনের আমলেখগঞ্জ থেকে চিতাওয়ান প্রায় ৬৯ কিলোমিটার প্রসারণ। অন্যটি উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে নেপালের ঝাঁপা পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার, যার মধ্যে ৩৫ কিলোমিটার ভারতে ও ১৭ কিলোমিটার নেপালের মধ্যে দিয়ে নতুন পাইপলাইন নির্মাণ। দুটি প্রকল্পেই কেন্দ্রীয় স্তরে মঞ্জুরি পাওয়ার পর এদিন ‘মউ’ সম্পন্ন হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী এবং নেপালের শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রী রমেশ রিঝালের মধ্যে। সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি-ঝাঁপা পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন গঠন প্রকল্পে ধার্য হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকা। যেখানে নেপালের ঝাঁপাতে ৪০ হাজার কিলোলিটারের স্টোরেজ ট্যাংকও নির্মাণ করা হবে বলে দাবি করা হয়েছে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে।