রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: সিকিমে হ্রদ বিপর্যয়ের পর পথ বদলেছে তিস্তা (Teesta)। পলিতে ভরেছে নদীর বুক। জল ‘খুঁজে পাওয়া’ই যেন দায়। অগত্যা মাঝপথেই বদলাতে হচ্ছে শিলিগুড়ির (Siliguri) দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের নকশা। তিস্তায় নাব্যতা কমে যাওয়াই তার মূল কারণ বলে জানাচ্ছে পুরনিগম।
যে এলাকা থেকে জল তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেই এলাকায় প্রকল্প হলে তা খুব বেশিদিন স্থায়ী হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এরপরই নকশা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরনিগম। সেইমতো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur university) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জলসম্পদ বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক শিলিগুড়িতে আসছেন। সকাল থেকে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখার পর বিকেলে মেয়র গৌতম দেবের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি।
তাঁর রিপোর্ট পাওয়ার পর নতুন করে নকশা তৈরি হবে। সেইমতো শুরু হবে পাইপলাইনের কাজ। গৌতম বলছেন, ‘যেখান থেকে জল তোলা হবে ঠিক হয়েছিল সেই এলাকায় সমস্যা রয়েছে। এখন না শোধরালে পরবর্তীতে সমস্যা হবে। তাই নতুন সমীক্ষা করে কাজ হবে।’ গৌতমের কথায় স্পষ্ট, নকশা বদলের ফলে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লাগবে আরও খানিকটা। ফলে শিলিগুড়িবাসীর জলসমস্যা খুব তাড়াতাড়ি মেটার নয়। এই দুর্ভোগ চলতেই থাকবে।
৫১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শিলিগুড়িতে দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় ২৬০ কোটি টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা। নির্বাচনি আচরণবিধি সম্পন্ন হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের টেন্ডার হবে। সূত্রের খবর, প্রকল্পের খরচ আরও ৭৬ কোটি টাকা বাড়ছে। কিন্তু সিকিমের বিপর্যয়ের পর এই জলপ্রকল্পে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সূত্রের খবর, যে জায়গা থেকে জল তোলার পরিকল্পনা ছিল, সেখানেও পলি জমতে শুরু করেছে। কাজ করতে গিয়ে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা বিষয়টি লক্ষ করেছে। আগে যেখানে দীর্ঘকালীন জল পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল, এখন সেখানে আর তা নেই। ওই এলাকায় প্রকল্প হলে তার ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়বে। তাই তিস্তা ক্যানালে কোথা থেকে দীর্ঘকালীন জল পাওয়া সম্ভব তা নিয়ে নতুন করে সমীক্ষা করতে হবে। সেই সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে।
মঙ্গলবার যাদবপুরের ওই দলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (এমইডি) এবং পুরনিগমের আধিকারিকরাও। বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জলপ্রকল্পটিকে বাস্তবায়িত করতে বিকল্প কোন পথ বাতলান, এখন সেই অপেক্ষাতেই পুরনিগমের কর্তারা।