করনদিঘিঃ টিফিনে বাড়িতে যাওয়ার অপরাধে এক ছাত্রীকে ১৫০ বার কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়ে ছাত্রী। বিপাকে পড়ে যায় অভিযুক্ত শিক্ষক। শিক্ষকের বিরুদ্ধে করনদিঘি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ছাত্রীর পরিবার। গত শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে করনদিঘি থানার অধীন আলতাপুর হাই স্কুলে। কানধরে ওঠবসের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছে অবিভাবকরা। নির্যাতিতা ছাত্রীটি বর্তমানে রায়গঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গিয়েছে, স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে নিজের বাড়িতে গিয়েছিল আলতাপুর হাই স্কুলের এক ছাত্রী। বিষয়টি জানতে পারেন স্কুলেরই ইতিহাসের শিক্ষক ভজন রায়। বাড়িতে যাওয়ার অপরাধে ছাত্রীকে ক্লাসের ভিতরেই ১৫০ বার কানধরে ওঠবস করায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ক্লাসেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ছাত্রী। এরপরই অভিযুক্ত শিক্ষক স্থানীয় এক হাতুড়ে ডাক্তারকে দেখিয়ে টোটোতে চাপিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বিষয়টি জানার পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকেরা নিয়ে যান করনদিঘি হাসপাতালে। সেখানে শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রেফার করা হয় রায়গঞ্জ হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ভজন রায়ের বিরুদ্ধে করনদিঘি থানায় অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন অভিযুক্ত। এই প্রসঙ্গে বালুরঘাটের বাসিন্দা ভজন রায় জানান, তিনি জানতে পেরেছেন থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আইন আইনের পথেই চলবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, শাস্তির পরিমান বেশী হয়ে গেছে। ঘটনার দিন শনিবার রাতে খবর পেয়েই আমি করনদিঘি হাসপাতালে গিয়ে ছাত্রী ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। ছাত্রীর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করবেন অভিযুক্ত শিক্ষক ভজন রায়।
ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনায় মঙ্গলবার স্কুলে এসে বিক্ষোভ দেখায় অবিভাবকরা। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের টিআইসি আমিনুল ইসলাম, ছাত্রীর বাবা আকালু সাউরিয়া ও স্কুলের পরিচালন কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। বৈঠক শেষে আকালু সাউরিয়া জানান, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’