চাঁচল:মহালয়ার দিন মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিবাদ। সেই বিবাদের জের গড়াল একাদশী পর্যন্ত। ঘটনায় লাগলো রাজনীতির রং। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের পথ অবরোধে লাঠিচার্জ করল পুলিশ। বুধবার সকাল থেকেই এনিয়ে অগ্নিগর্ভ হয়ে থাকল চাঁচল ১ নং ব্লকের কলিগ্রামের নিমতলা এলাকা। কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেজাউল খানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগকে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং জোট কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। অভিযোগ, প্রধান রেজাউল খানের ভাই ইমরান খানকে রাস্তায় ফেলে বাঁশ লাঠি দিয়ে চলে বেধড়ক মারধর। গুরুতর আহত অবস্থায় ইমরান খান এই মুহূর্তে মালদা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন। অষ্টমীর রাতে এই বিবাদের সঙ্গে যুক্ত একজনের বাড়িতে আগুন লেগে যায়। যারা আবার জোটের সমর্থক। পরিবারের লোকেরা অভিযোগ করে প্রধান রেজাউল খান এবং তার অনুগামীরা এই অগ্নিকান্ডের পেছনে যুক্ত। এই অভিযোগে মহানবমীর দিন সকালে ছয় ঘন্টা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তারপর বুধবারের এই সংঘর্ষ। সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
এদিকে ভাই তথা কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে রেজাউল খান রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। ঘটনাস্থলে চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শুভেন্দু মণ্ডলের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিক্ষোভ তুলতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে আসেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এনিয়ে সারাদিনই এলাকার পরিস্থিতি ছিল থমথমে। বন্ধ ছিল দোকানপাট। চলেছে পুলিশের টহলদারি। সন্ধ্যে পর্যন্ত এই ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেজাউল খান বলেন,” সামান্য খেলার এক বিবাদ নিয়ে জোট রাজনীতি করছে। ঐদিন আমার ছোট ভাইকে বেধড়ক মেরেছিল। আমরা পুলিশে অভিযোগ জানানোর পর নজর ঘোরাতে প্রথমে অগ্নিকাণ্ডের নাটক করল। কাল রাতে আমার বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছিল। সকালে ফের আমার ছোট ভাই এবং কর্মীদের ওরা মারধর করলো বেধড়কভাবে। সেদিন যখন ওরা রাজ্য সড়ক অবরোধ করল পুলিশ লাঠিচার্জ করেনি। আজ আমি করলাম কিন্তু লাঠিচার্জ করা হলো। আমরা আক্রান্ত হচ্ছি সুবিচার পাচ্ছি না।পুলিশ আগে থেকে সক্রিয় হলে এত কিছু হতোই না।কংগ্রেস এবং সিপিএমের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আমিনুল হক ও বাহারাম খানের চক্রান্ত এইসব।” অপরপক্ষের শেখ মারসুদ আলির অভিযোগ, “সেদিন প্রধান এবং তার অনুগামীরা অগ্নি সংযোগ করল। যাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়েছিল আজ সকালে প্রধান এবং তার অনুগামীরা আবার সেই বাড়িতে চড়াও হয়। ওদের হাতে বোম বন্দুক ছিল। বেশ কয়েকজনকে মারধর করেছে। গ্রামবাসীরা সহ্য করতে না পেরে সম্মিলিতভাবে পালটা প্রতিরোধ করেছে।” কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য আমিনুল হকের বক্তব্য, “এই ঘটনা গ্রামের দুই পক্ষের বিবাদ। এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে যা হচ্ছে খুব নিন্দনীয়। রেজাউল খান এবং তার অনুগামীরা গুন্ডারাজ চালাচ্ছে।’ সিপিআইএমের পঞ্চায়েত সদস্য বাহারাম খান জানান, “এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। তবে যাদের সাথে ঝামেলা ওদের মধ্যে অনেকে জোটের সমর্থক রয়েছে বলে ওদের রাগটা আরো বেশি। আমরা চাইছি পুলিশ প্রশাসন সক্রিয় হোক।”