দার্জিলিং: বিশ্ব পর্যটনে প্রসিদ্ধ দার্জিলিংয়ের টাইগার হিল নিয়ে পর্যটন মহলে ক্ষোভ বাড়ছে। সূর্যোদয় দেখার জন্য টাইগার হিলে পৌঁছাতে বন দপ্তর ও গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) মাথাপিছু ৭০ টাকা (বন দপ্তর ৫০ টাকা, জিটিএ ২০ টাকা) করে তুলছে, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য আলাদা টিকিট নিতে হয়। অথচ পরিষেবার নামগন্ধ নেই। টাইগার হিল পৌঁছে সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। মাঝে বৃষ্টি, ঝড় এলে আশ্রয় নেওয়ার মতো জায়গাও নেই। পর্যটকদের প্রশ্ন, এত টাকা নেওয়ার পরেও কেন পরিষেবা দেওয়া হবে না?
জিটিএ’র পর্যটন বিভাগের আহ্বায়ক দাওয়া শেরপার বক্তব্য, ‘টাইগার হিলে যাতায়াতের নতুন রাস্তা তৈরি হয়েছে। প্যাভিলিয়নের বরাতপ্রাপ্ত এজেন্সি সঠিকভাবে, সঠিক সময়ের মধ্যে কাজ করতে না পারায় তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন এজেন্সি নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। দেড় বছরের মধ্যেই টাইগার হিলের প্যাভিলিয়ন তৈরি হয়ে যাবে।’
ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮১০০ ফুট উচ্চতায় টাইগার হিল দেশ–বিদেশের পর্যটকদের কাছে সমানভাবে পরিচিত। পাহাড়ে এসে একবার টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় না দেখলে দার্জিলিং ঘোরাটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আর তাই শীত, গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা, পর্যটকরা দার্জিলিং বেড়াতে এসে একবার টাইগার হিলে যান। বন দপ্তর জানিয়েছে, এখন পর্যটনের মরশুম না হলেও প্রতিদিন গড়ে ১৬০০ পর্যটক টাইগার হিলে আসছেন। ভরা মরশুমে প্রতিদিন গড়ে ৪০০০ পর্যটক টাইগার হিলে আসেন। হিসাবই বলছে, এখান থেকে বন দপ্তর এবং জিটিএ প্রচুর আয় করছে।
সোমবার ঘুম থেকে টাইগার হিলের রাস্তায় পা রাখতেই দেখা গেল ঝাঁ চকচকে ম্যাস্টিক রাস্তা তৈরি হয়েছে। জিটিএ’র তরফে এই রাস্তা তৈরির কৃতিত্ব দাবি করে কিছুটা দূরে দূরেই বোর্ড ঝোলানো হয়েছে। কিন্তু আঁকাবাঁকা চড়াই রাস্তা পেরিয়ে সিঞ্চল মন্দির হয়ে টাইগার হিলে পা রাখতেই মন খারাপের জোগাড়। ২০১৬ সাল থেকে যে প্যাভিলিয়ন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল, সেটি এখনও অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যা দেখে পর্যটকরা ক্ষোভ উগরে দিলেন। কলকাতার খিদিরপুরের সোমলতা বিশ্বাস, আসানসোলের হরিপুরের বাসিন্দা অভিষেক রজক, অবিনাশ তুরি সহ অন্যরা বললেন, টাকা নিচ্ছে, অথচ এখানে কোনও পরিষেবা নেই। প্যাভিলিয়ন বহু বছর ধরে তৈরি হচ্ছে বলে আমরা শুনেছি। এখন এসে দেখছি অর্ধনির্মিত হয়ে পড়ে রয়েছে। তাহলে মানুষ এখানে কীভাবে সূর্যোদয় দেখবে। প্যাভিলিয়ন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এখানে ঢুকতে টাকা নেওয়া উচিত নয়।
জিটিএ সূত্রে খবর, প্যাভিলিয়নের নকশায় গরমিল রয়েছে। সামনে এমন করে কিছু কংক্রিটের পিলার দেওয়া হয়েছে যার জেরে পর্যটকরা প্যাভিলিয়ন থেকে ভালো করে সূর্যোদয় দেখতে পাবেন না। সেইজন্য কিছু অংশ ভেঙে আবার নতুন করে তৈরি করতে হবে।