শুভদীপ শর্মা, লাটাগুড়ি: বৃষ্টির দেখা নেই কয়েক মাস ধরে। জঙ্গলের বিভিন্ন খালবিল শুকিয়ে কাঠ। এমনকি গরুমারা জঙ্গলের (Gorumara Forest) মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া মূর্তি নদীতেও জল নেই বললেই চলে। স্বভাবতই জলকষ্টে ভুগছে গরুমারার ছোট-বড় মিলে কয়েক হাজার বন্যপ্রাণী (Wild Animal)। বুনোদের জলকষ্ট (Water Crisis) মেটাতে জঙ্গলের মাঝে কৃত্রিম জলধার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বন দপ্তর (Forest Department)। এই জলাধারের সাহায্যেই বর্ষা না আসা পর্যন্ত গরুমারার বুনোদের জলকষ্ট মেটানো যাবে বলে আশা বনকার্তাদের।
এই মুহূর্তে গরুমারায় কুনকি হাতির সংখ্যা ২৭টি। এছাড়া শাবক সহ বহু জংলি হাতি রয়েছে। ৫৫টিরও বেশি গন্ডার, প্রায় ১৬০০ বাইসন, কয়েকশো সম্বর, চিতাবাঘ ও হাজারো অন্য প্রাণী রয়েছে। এত বিপুল সংখ্যক বন্যপ্রাণীর জন্য বিপুল পরিমাণ জলেরও প্রয়োজন। গরুমারার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া মূর্তি নদীর জল তাদের জলের প্রয়োজনের একটা বড় অংশ মিটিয়ে দেয়। কিন্তু এখন আর তা হচ্ছে না।
চলতি বছর শীতে ডুয়ার্সে বৃষ্টি পড়েনি বললেই চলে। শেষ বৃষ্টি কবে হয়েছে? তাও ঠিক মনে করতে পারছেন না বন দপ্তরের কর্তারা। এরকম পরিস্থিতিতে মূর্তি নদীতে জল নেই বললেই চলে। জঙ্গলে থাকা বিভিন্ন খালবিলও প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। শুধু গরুমারা নয়, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলের প্রায় একই পরিস্থিতি বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণী বিভাগের বনপাল ভাস্কর জেভি। তিনি বলেন, ‘এবছর বৃষ্টির ঘাটতির জন্য সমস্যা আরও বেড়েছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য গরুমারার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে নতুন করে বেশ কিছু জলাধার তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
বিভিন্ন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে বাঁধ দিয়ে জলাধার তৈরি করাই ছিল। এই বাঁধগুলি এমনভাবে তৈরি হয়েছে যাতে নদী তার গতিপথে বাধা না পায়। বালির বস্তা দিয়ে বেশ কিছুটা জায়গা আটকে সেখানে জল জমানো হচ্ছে। বাড়তি জল নদী দিয়েই বয়ে যাচ্ছে। এতে একদিকে নদী স্বাভাবিকভাবে বইছে, পাশাপাশি বন্যপ্রাণীর তৃষ্ণাও মিটছে। তাছাড়া কিছু স্থানে নদী খনন করে গভীরতা বাড়িয়ে জলের ব্যবস্থা করা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভাস্কর। এই উদ্যোগের ফলে বন্যপ্রাণীদের জলকষ্টের সমস্যা আর হবে না বলে দাবি বনকর্তাদের।