উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বেশিরভাগ মহিলাই মেনোপজের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ডিপ্রেশনের কবলে পড়েন। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে মেনোপজ একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া– চান বা না চান, কোনও একদিন সে সত্যিটা আপনাকে স্বীকার করে নিতেই হবে! আপনার পরিবারের মহিলাদের, অর্থাৎ মা-মাসি-দিদিমাদের মেনোপজ যেমন সময়ে হয়েছে, সেই সময়কালের কাছাকাছিই আপনারও ঋতুবন্ধ হওয়ার কথা। তবে ডায়েট ও জীবনযাপন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে তা কিছুদিন পিছিয়ে দেওয়া যায়।
মেনোপজ ঠিক কখন হয়, তা জানেন তো? প্রত্যেক মহিলার জন্মই হয় ডিম্বাশয় বা ওভারিসহ। ওভারিতে প্রায় এক মিলিয়ন ডিম্বাণু থাকে। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পর থেকেই এই ডিম্বাণুগুলিকে এক এক করে ছাড়তে থাকে শরীর, বয়স ৩০ পেরোনোর পর সংখ্যাটা কমতে থাকে, ৪০-এর পর আরও দ্রুত হারে কমে ডিম্বাণু সংখ্যা – কমে আসে গর্ভধারণের সম্ভাবনাও। মেনোপজ হওয়ার অর্থ হচ্ছে ডিম্বাণু নিঃশেষিত এবং সেই কারণেই ডিম্বাশয়ে আর ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন তৈরি হচ্ছে না। লাগাতার বছরখানেক পিরিয়ড না হলে ধরে নিতে হবে যে ঋতুবন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে এই পুরো পর্বটাতেই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলাটাও একান্ত জরুরি।
ঋতুবন্ধ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য গোটা দুনিয়াতেই নিরন্তর নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। অল্প বয়সে ওভারি থেকে টিস্যু বের করে ফ্রিজ করে রাখা এবং বেশি বয়সে সেটি পুনরায় ডিম্বাশয়ে প্রতিস্থাপন করে জরার মার ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে বহুদিন। সেক্ষেত্রে মেনোপজ বেশ অনেকটাই পিছিয়ে দেওয়া যাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নিঃসন্দেহে পদ্ধতিটি খরচসাপেক্ষ হয়ে দাঁড়াবে। তাছাড়া, ওভাবে অনন্তকালের জন্য জরা ঠেকিয়ে রাখলে আরও কী কী সমস্যা হতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের পরিষ্কার কোনও ধারণাই তৈরি হয়নি এখনও।
তার চেয়ে সুস্থ জীবনযাপনের উপর জোর দিন। বলা হয়, যে সব মহিলার নিয়মিত যৌন জীবন আছে, তাঁদের মেনোপজ দেরিতে হয়। সেই সঙ্গে খাদ্যতালিকায় যাঁদের মাছ, ডাল, সবুজ তরিতরকারির পরিমাণ বেশি থাকে, তাঁরা ঋতুমতীও থাকেন বেশিদিন। সেই সঙ্গে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করুন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, হাসিখুশি থাকুন। স্ট্রেস যেন আপনার ধারপাশ না মাড়ায় তা দেখবেন। তা হলেই সুস্থ থাকবে শরীর এবং মেনোপজও হবে দেরিতে। তবে যেহেতু এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তাই মেনোপজ বা ঋতুবন্ধ একদিন না একদিন মেনে নিতেই হবে। সে জন্য মনকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করাটা বরং অনেক বেশি বুদ্ধিমানের কাজ।