শিলিগুড়ি: বিশেষ কারণ এবং উপযুক্ত অনুমতি না নিয়ে কোনও চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী কর্মস্থলের বাইরে যেতে পারবেন না। এমনই নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য দপ্তর। কিন্তু ভোটের আগে আচমকা কেন এই নির্দেশ, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, ‘ভোট প্রচারে প্রচুর ভিভিআইপি রাজ্যে আসছেন, সামনেই আবার ইদ। সেসব কারণে এই নির্দেশ হতে পারে।’
চিকিৎসকদের অপর অংশের বক্তব্য, ‘সাধারণ নিয়মেই প্রয়োজন ছাড়া কর্মস্থল ছেড়ে যাওয়া যায় না। এটা তো বরাবর কার্যকর রয়েছে। তাহলে নতুন করে এই নির্দেশিকার কী প্রয়োজন?’ স্বাস্থ্য দপ্তরের এক শীর্ষস্থানীয় আধিকারিক এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, রাজ্যে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবাকে আরও ভালো করতে এই নির্দেশিকা দেওয়া হল।
চিকিৎসক, নার্স সহ অন্য সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীর নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা নিয়ে বুধবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে দুটি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। রাজ্যের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা এবং জেলা থেকে ব্লক স্তরের হাসপাতালগুলোকে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। দুটি ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে, উপযুক্ত অনুমতি ছাড়া চিকিৎসক থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরের চিকিৎসাকর্মীর কেউই কর্মস্থল ছাড়তে পারবেন না। প্রত্যেককে নিজের কাজের জায়গায় সর্বক্ষণের জন্য থাকতে হবে। তবে, ঠিক কী কারণে এই নির্দেশিকা, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে, এই নির্দেশিকা উত্তরবঙ্গের মেডিকেল কলেজগুলোর ক্ষেত্রে কার্যকর করা হবে তো? কারণ, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সহ এখানকার প্রতিটি মেডিকেলেই সিনিয়ার ডাক্তারদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে ফঁাকিবাজির অভিযোগ ওঠে বারবার। কলকাতার বাসিন্দা এই চিকিৎসকদের অনেকেই মাসের পর মাস না এসেও বেতন তুলছেন বলে শোনা যায়। কেউ সপ্তাহে দু’দিন থাকেন, কেউ আবার মাসের শেষে এসে পুরো হাজিরা খাতায় সই করে দিয়ে চলে যাচ্ছেন কলকাতায়। এসব নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা কোনওদিন পদক্ষেপ করেননি। বরং সিনিয়ার রেসিডেন্স, ইন্টার্ন ও জুনিয়ার ডাক্তারদের দিয়ে সমস্ত কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন জেলা থেকে এমডি, এমবিবিএস সহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগীদের মেডিকেলে রেফার করছেন। এখানে এসে সেই রোগীদের জুনিয়ার ডাক্তারদের কাছে পরামর্শ নিতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই দাবি উঠেছে, এই নির্দেশ সেই সমস্ত সিনিয়ার ডাক্তারের ক্ষেত্রে কার্যকর করা হোক দ্রুত।