মুর্শিদাবাদ: ২০১৯ সালে কাশ্মীরে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভার মোড় গ্রামের বাহালনগর গ্রামের পাঁচ শ্রমিকের। সেই সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, এলাকার আর কোনও শ্রমিককে রাজ্যের বাইরে আপেল চাষের কাজে যেতে হবে না। এবার থেকে নিজেরাই সরকারি সাহায্যে এখানেই আপেলের চাষ করতে পারবেন। সেইমতো সাগরদিঘির কিষান মান্ডির পাশে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে আপেল চাষের পরিকল্পনা শুরু করা হয়েছিল। রাজ্যের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল দু-তিন ধরনের আপেল গাছের চারাও। কিন্তু তারপর প্রায় দু’বছর পেরিয়ে গেলেও সেই গাছে আর আপেল ফলাতে পারেননি কেউ।
যদিও এই চাষ কী কারণে বন্ধ হয়ে গেল, তা নিয়ে অনেকেই নানান প্রশ্ন তুলেছেন। কারও কথায়, আপেল চাষের উপযুক্ত পরিবেশ নয় এই জেলা। আবার কারও কথায়, শ্রমিকরা সঠিকভাবে তাঁদের মজুরি না পাওয়ার কারণে সেখানে আপেল চাষ স্বপ্ন হয়ে থেকে গিয়েছে। রুজির টানে ভিনরাজ্যে এই জেলার বহু শ্রমিকরা কাজে যান। তেমনি কাশ্মীরে আপেল ভাঙার কাজে জেলার অনেকেই গিয়ে থাকেন। ইকবাল হোসেন নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘আপেল চাষ কীভাবে হয় তা জানতাম না। তার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু আমরা ততটা দক্ষ নই। তার থেকে বড় কথা কাজের পরে মজুরি যদি না পাই তাহলে সেই কাজ করে কী হবে। তাই আমরাও আর সেই কাজ করতে যায়নি।’
যদিও সাগরদিঘির বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত সাহা আবার নতুন করে সেখানে আপেল চাষ করার স্বপ্ন দেখছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রীর কথা, ‘এটা মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন। সেটাকে বাস্তব রূপ দেওয়ার কথা আমাদের। কী কারণে সেখানে এই কাজ বন্ধ হয়েছে সেই বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়েছি। কিছুটা আমাদের ভুল ছিল বলে ঠিকভাবে চাষের কাজটা করা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এবার আমরা খোঁজ নিয়েছি। বেঙ্গালুরু থেকে সবুজ আপেলের গাছ নিয়ে এসে এখানে লাগব। যাঁরা এই আপেল চাষ করেন তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সব প্রজাতির আপেল এখানে চাষ করা না গেলেও সবুজ আপেল সহ আরও এক প্রজাতির আপেল আমাদের এই জেলার আবহাওয়ায় বড় হয়ে উঠতে পারে। সেই কারণের জন্য কিছু দিনের মধ্যে আবার সেখানে নতুন করে আপেল চাষের কাজ শুরু হবে। শ্রমিকদের যেমন কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে না তেমনই জেলাতে আপেল চাষ করতে পারলে চাহিদা মতো দামও কম পাবেন স্থানীয় লোকজন।