ধূপগুড়ি: আজব কাণ্ড ধূপগুড়িতে! পাবজি বন্ধুর টানে সুদূর কর্ণাটক থেকে ধূপগুড়ি এলেন এক যুবতী। না এটা কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়, বাস্তব ঘটনা। ব্যপারটা এবার খোলসা করেই বলা যাক। মোবাইল ফোনে তো অনেকেই পাবজি খেলেন। এখন এই খেলাটির নাম পাবজি: ব্যাটেলগ্রাউন্ডস। তবে পাবজির অর্থ জানা আছে? প্লেয়ার্স আননোওন ব্যাটেলগ্রাউন্ডস। অনলাইন এই খেলায় প্রতিযোগীরা একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলেন। পরস্পরকে তেড়ে আক্রমণ করার পাশাপাশি অনেকে দিব্যি মন দেওয়া নেওয়াও করে বসেন। তা চূড়ান্ত পরিণতিও পায়। পাবজিকে কেন্দ্র করে গোটা বিশ্বে এমন বহু ঘটনাই ঘটেছে। এবারে উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়িতেও ঘটল। পাবজি বন্ধুর টানে ধূপগুড়িতে এসে ঘর বাঁধলেন কন্নড় যুবতী। এই সুবাদে ধূপগুড়ির আজব ইতিহাসে আরও একটি অধ্যায় যুক্ত হল।
‘ধূপগুড়ির আজব ইতিহাস’ শুনে কি অবাক লাগছে? যাঁরা এই ইতিহাস জানেন তাঁরা কিন্তু একদমই অবাক হবেন না। বিয়েতে নাছোড়বান্দা প্রেমিকার বাড়ির সামনে টানা ধর্না দিয়ে শেষে তাঁর গলায় বিয়ের মালা পরানো, দ্বিতীয় প্রেমিকের দিকে ঝুঁকে পড়া প্রেমিকার সঙ্গে রীতিমতো স্ট্যাম্প পেপারে অরিজিনাল প্রেমিকের অফিশিয়াল ব্রেকআপ, মেসোশ্বশুরের সঙ্গে অন্তরঙ্গ রিল ভিডিও ভাইরাল, এই ইতিহাসের বহু অধ্যায়। এবারে তাতে আরও একটি অধ্যায়ের সংযোজন।
আরও পড়ুন : করোনা সতর্কতা, নকশালবাড়ি বাজারে স্যানিটাইজেশন
ধূপগুড়ির বারোঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্য বড়াগাড়ির আলসিয়ার মোড়ের বাসিন্দা সাইনুর আলম নিয়মিত পাবজি খেলেন। এই গেম খেলতে খেলতেই একদিন কর্ণাটকের ফ্রিজার সঙ্গে আলাপ। ধুমধাড়াক্কা গেমে কখন যে প্রেমের ফুল ফুটল প্রথমে তা কেউই খেয়াল করেননি। যখন খেয়াল করলেন , গেমের মধ্যে যুদ্ধটা একদম বন্ধ। তারপর? ফোন নম্বর চালাচালি, হোয়াটসঅ্যাপ আর তারপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে বুঁদ হয়ে থাকা। অনলাইনে দুজন দুজনকে দেখেছেন বটে। কিন্তু সামনাসামনি? সেই দেখা সারতেই ফ্রিজা শনিবার ধূপগুড়িতে উপস্থিত। বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে চেপে বাগডোগরা হয়ে ধূপগুড়ি। ডোরবেলের আওয়াজ শুনে সাইনুর দরজা খুলে ফ্রিজাকে সশরীরে দেখে রীতিমতো বিষম খাওয়ার জোগাড়।
কী কেস? বাড়ির লোকের প্রশ্ন। সাইনুরের জবাব শুনে পরিবারের তো আক্কেল গুড়ুম। স্রেফ প্রেমের টানে ফ্রিজা যে ২৫৫৪ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে এখানে আসতে পারেন তা প্রথমে তাঁদের বিশ্বাসই হয়নি। পরে দুজনের নাছোড়বান্দা মনোভাবে সেই বিশ্বাস ভিত্তি পায়। পরিবারের কাছে দুজনেই বিয়ের দাবি জানান। ফ্রিজার বাড়ির সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। রবিবার তাঁরা ধূপগুড়িতে উপস্থিত হন। দুই পরিবারের উপস্থিতিতে চার হাত এক হয়। কর্নাটকের বধূকে দেখতে ভিড় জমে গ্রামে। পাবজির কল্যাণেই গ্রামে নতুন বউ আসায় খুশি এলাকাবাসী।
সাইনুর বাবার গালামালের দোকান সামলান। তিনি বলেন, ‘পাবজি খেলতে গিয়ে চার বছরের সম্পর্ক এদিন পূর্ণতা পেল।’ আর ফ্রিজা লজ্জারাঙা মুখে কোনও কথা বলার অবস্থাতেই ছিলেন না। তবে তাঁর খুশিতে ভরা দু চোখই যেন সবকিছুই বলে দিচ্ছিল।
আরও পড়ুন : বেপরোয়া বিজেপি প্রার্থী! নিয়ম মেনে রবিবাসরীয় প্রচারে সিপিএম-তৃণমূল